করোনা বাউফলে প্রতিবন্ধী আলমের সংসারে হিসাব মিলছে না: ৬ সদস্য পরিবার নিয়ে অর্ধাহারে দিনযাপন

করোনা বাউফলে প্রতিবন্ধী আলমের সংসারে হিসাব মিলছে না: ৬ সদস্য পরিবার নিয়ে অর্ধাহারে দিনযাপন

সাইফুল ইসলাম, বাউফল : প্রতিবন্ধী আলম ব্যাপারী। ৪ সপ্তাহ ধরে কাজ কর্ম-ব্যবসা ও বাণিজ্য বন্ধ
রয়েছে। ধার-দেনা করে অর্ধাবেলা কিংবা আধা পেট আহার করেছে। কত
দিন এ ভাবে চলবে। তাই ৬ সদস্য পরিবার নিয়ে হতাশায় ভুগেছে।
উপজেলার নওমালা ইউনিয়নের বিডিসি মার্কেট পাশে ছোট একটি
টিনের ঘর। ঘরের সামনে এক চালা টিনের ছাউনির মধ্যে চা-বিস্কুটের
ব্যবসা করতে। সারাদিনের বিক্রিত পন্যের ব্যবসা দিয়ে সংসার চলছিল।
ঘরে টিভি-মোবাইল নেই। কতসময় ঘরের মধ্যে বন্ধী থাকা যায়। দম
আটকে পড়ে। তাই দোকানে ঝাঁপ ফেলে সামনের বেঞ্চ বসে দিন গুনছে।
পাশেই কন্যা সন্তান ও স্ত্রী বসে ভাবনা করছে।
করোনা গ্রামাঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রা প্রভাব নিয়ে সরেজমিন তথ্য
সংগ্রহ করতে গেলে ৬ সদস্য একই সাথে বসতে দেখে দৃষ্টি কাঁড়ে।
হোন্ডা থামিয়ে কথা বলতে গেলে আতকে উঠে। কারন, মাঝে মধ্যে পুলিশ
সেনাবাহিনী ধাওয়া দিয়ে থাকে। আধাঘন্টা ব্যাপী কথা হয় পরিবারের
সাথে। গত ৪ সপ্তাহ ধরে অনিয়মিত দোকান চলছে।
পুলিশ প্রশাসনে চোঁখে ফাকি দিয়ে সকালে ২/৩ ঘন্টা চা বিস্কুট
দোকন করে যা পায় তা দিয়ে চাউল ক্রয় করেন। প্রতিবন্ধী হিসাবে ভাতা
পেলেও ১০ মাস পূর্বে পেয়েছে। বর্তমানে ভাতা পাওয়ার কোনো সাড়া
শব্দ নেই। স্ত্রী ফেয়ার কার্ড নামের ৩০ কেজি চাউল পেলে বাড়িতে
মাপিয়ে ২০ কেজি পেয়েছে। এ চাউল পূর্বের ধার করা পরিশোধ করে
শূন্য পাতিল রয়ে গেছে। সকালে ভাত খায়নি। চার মুরি খেয়েছে। দুপুর
বেলা কেজি দেড় চাউল বাকিতে ক্রয় করেছে।
পরিবার হিসাব দিতে গিয়ে প্রতিবন্ধী আলমের স্ত্রী হালিমন জানালেন,
কপালে লেখন যায় না খন্ডন। প্রতিবন্ধী সংসারে যুক্ত হয়ে দু:খ-কষ্ট মাত্রা
বেড়ে গেছে। ধার-দেনা করে দোকান দিলাম। ৪ সন্তান। বড় ফেমে
মানছুরা-১০ম শ্রেনী, মেঝো মেয়ে ৭ম শ্রেনী, সেজো মেয়ে মিম
৪র্থ শ্রেনীতে পড়াশোনা করেছে। সাথে রয়েছে ১ বছর বয়সী কন্যা
সন্তান। প্রতিদিন কমপক্ষে দেড় কেজি চাউল প্রয়োজন। রয়েছে অন্যানা
রান্না সাগ্রী সন্তানের লেখপাড়া খরচ তা যেন করোনা কেড়ে
নিয়েছে। আর কতদিন এ ভাবে চলতে হবে তাই হিসাব মিলাতে পারছি
না।